রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন
মো. এরশাদ, চট্টগ্রাম থেকে।।
ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২য় ধাপে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের উপজেলা নেতা।
বৃষ্টির মধ্যেই প্রার্থীরা ছুটছেন এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা। ভোট চাইছেন ভোটারের কাছে নিজের জন্য। এবারে দলীয় প্রতীক না থাকায় এবং বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেরাই নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছ। ২ মে প্রতীক বরাদ্দের পর ২১ মে’র ভোট যুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পছন্দের প্রতিক নিয়ে ৩ পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পুরোদমে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন।
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। হাট-বাজার, চায়ের দোকানে চলছে ভোটের আলোচনা সমালোচনা। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার অলিগলি।
নির্বাচনের আর ১৪ দিন বাকি থাকলেও ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। একদিকে বৃষ্টি ও তীব্র দাবদাহে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। এ ছাড়া বোরো ধান কাটা আর সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। এ পরিস্থিতিতে চলছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গণসংযোগ, মোটরসাইকেল শোডাউন, পথসভা ও মিছিলের মাধ্যমে প্রার্থীরা সরব।
এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নির্বাচন পরিণত হয়েছে বিভক্ত আ. লীগের ভোটের লড়াইয়ে। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই প্রার্থীও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় নেতা।
এ রকম পরিস্থিতিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফটিকছড়ি আওয়ামী নেতৃত্ব ও রাজনীতি দ্বন্দ্বে পুরনো পথে হাঁটছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা।
চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী। তারা হলেন, মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী ও আনারস প্রতীক নিয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্র নেতা মুঃ বখতেয়ার সাঈদ ইরান।
ওই ২ প্রার্থী কে ঘিরে ২ ভাগে বিভক্ত উপজেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগ। প্রভাব পড়েছে নেতাকর্মীর মাঝে। দুই প্রার্থী আওয়ামীলীগের, তাই ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মী এই নির্বাচনের মাঠে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না কারো পক্ষেই। আবার অনেকে প্রকাশ্য না হলেও গোপনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন দুজনকেই।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী। উনারা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট সালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন (বই), ফটিকছড়ি পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জসিম উদ্দিন (টিউবওয়েল), সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কৌরাইশী (তালা), নাজিমুদ্দিন সিদ্দিকী (চশমা)।
এদিকে, এডভোকেট সালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন ও মো: জসিম উদ্দিন। দুইজনেই আওয়ামীলীগের পরিচিত মুখ। এক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদেও বিভক্ত তৃণমূল আওয়ামী লীগ।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন দুজন প্রার্থী। এরা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্নাহার মুক্তা (প্রজাপতি) ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন আক্তার নুপুর (ফুটবল)।
দক্ষিণ পাইন্দং গ্রামের মো. ইদ্রিস নামে একজন বলেন, এখন বোরো ধান কটার মৌসুম চলছে। মানুষজন ব্যস্ত ধান নিয়ে। তাছাড়া কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির কারণেও সাধারণ মানুষ ভোট নিয়ে তেমন মাতছেন না।
এদিকে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কে সামনে রেখে গ্রামের পাড়া-মহল্লায় বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে হাটবাজারের চায়ের দোকান গুলোতে।
প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন ও পথসভায় তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এ নিয়ে ফটিকছড়িতে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
সাধারণ বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, “যে নেতা আমাদের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকে তাকেই নির্বাচিত করা দরকার”।